কয়েকটি কোটি টাকা ব্যয়ে সরকারের নির্মিত এ ট্রমা সেন্টারটি জনগনের কোনো কাজেই আসছে না।
ঢাকা সিলেট মহাসড়কে দুর্ঘটনায় আহতদের উন্নত চিকিৎসার জন্য ২০১০ সালে ফিজিক্যাল ডেভেলপমেন্ট প্রকল্পের আওতায় ট্রমা সেন্টার নির্মাণের পদক্ষেপ গ্রহণ করে সরকার। দেশের ছয়টি স্থানের মধ্যে বাহুবল হাসপাতালের পাশে ১০ শয্যার ট্রমা সেন্টারের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। এতে ব্যয় হয় ৩ কোটি ১৮ লাখ টাকা।
তিনতলা ভবনের নির্মাণ কাজ শেষ হয় ২০১৩ সালের শেষ দিকে। ২০১৪ সালে জানুয়ারি মাসে গণপূর্ত বিভাগ স্বাস্থ্য বিভাগের কাছে ভবনটি হস্তান্তরের জন্য চিঠি দেয়। কিন্তু, সে সময় গ্যাস-বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকায় স্বাস্থ্য বিভাগ ভবনটি গ্রহণ করেনি। এ নিয়ে সরকারের দুইবিভাগের চিঠি চালাচালিতেই কেটে গেছে ছয় বছর।
গণপূর্ত বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ২০১৩ সালের ২২ মার্চ হবিগঞ্জ পল্লী বিদ্যুত সমিতি বিদ্যুত সংযোগের জন্য ৪৭ হাজার ১২০ টাকা পরিশোধের জন্য ডিমান্ডনোট পাঠায়।
গণপূর্ত বিভাগের বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পের অগ্রগতি রিপোর্ট পর্যালোচনা করে দেখা যায়, পল্লী বিদ্যুতের ডিমান্ড নোটের টাকা জমা দেয়া হয়েছে। বিদ্যুত সংযোগের জন্য ২৬ মে ২০১৪ ও ২৯ জানুয়ারি ২০১৫ তারিখে দুইবার তাগিদপত্র দেয়া হয় গণপূর্ত বিভাগ। কিন্তু পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি অতিরিক্ত ৬ লাখ টাকা দাবি করায় হবিগঞ্জ গণপূর্ত বিভাগ বিষয়টি ঊর্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো ছাড়া আর কোন ব্যবস্থা নেয়নি।
এদিকে, ২০১৩ সালের ২৩ জুন গ্যাস সংযোগের জন্য ডিমান্ডনোট চেয়ে তৎকালীন নির্বাহী প্রকৌশলী জালালাবাদ গ্যাস কোম্পানিকে চিঠি দেন। এরপর এ সংক্রান্ত কোনো খোঁজ খবর না রাখায় ইতোমধ্যে সরকার সারাদেশে নতুন গ্যাস সংযোগ বন্ধ করে দেয়। ফলে ট্রমা সেন্টারে গ্যাস সংযোগ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো বিভিন্ন আসবাবপত্র অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে থাকায় এগুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
এ অবস্থায় শিগগিরই ট্রমা সেন্টারটি চালুর দাবি জানিয়েছেন উপজেলায় কর্মরত চিকিৎসক ও স্থানীয় বাসিন্দরা। ট্রমা সেন্টারটি চালু না হওযায় মহাসড়কে দুর্ঘটনায় আহতদেরকে ঢাকা ও সিলেট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠাতে হচ্ছে।
হবিগঞ্জের ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মুখলেছুর রহমান উজ্জল বলেন, গ্যাস-বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকায় ভবনটি গ্রহণ করা যাচ্ছে না। দীর্ঘদিন ভবনটির দরজা জানালা বন্ধ থাকায় নানা জটিলতা দেখা দিয়েছে।
বাহুবল ট্রমা সেন্টার সম্পর্কে কোনো তথ্য নেই বলে জানান হবিগঞ্জ গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীর দায়িত্বে থাকা মৌলভীবাজারের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মমিনুল হক।